শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শ্রেণির তেরো বছরের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক। উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান রবিবার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর শনিবার উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ২২নং দুলুখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রা ও শিক্ষার্থীর পরিবার জানায়, ওই দিন দুপুরে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল আবেদীন বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ওই ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন এবং শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন। তখন ওই ছাত্রী কেঁদে ওঠেন ও ছাত্রীর ছোট বোন তা দেখে ফেলেন। পরে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের বিষয়টি বলেন তারা এবং মা-বাবার কাছেও বিষয়টি জানান।
ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ওই প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও নড়িয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি দরখাস্ত দেয়া হয়। ওই ঘটনার পর থেকে ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, আমরা গরিব, আর আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী। জিয়াউল স্যারে লাইব্রেরিতে নিয়ে আমার মেয়ের গায়ে হাত দিয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল আবেদীন বলেন, ২০১৪ সালে বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী নিয়োগের বিষয় নিয়ে ওই এলাকার কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। আমি ওই ছাত্রীর সঙ্গে কিছু করিনি। মিথ্যা অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহ মো. ইকবাল মনসুর বলেন, এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি দরখাস্ত পেয়েছি। পরে ছাত্রী ও তার পরিবারের জবানবন্দি নিয়েছি। তদন্তর জন্য নড়িয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা হবে। নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়ন্তী রুপা রায় বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।