আজ সোমবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ ক্ষমতার দাপট ও প্রাণনাশের ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে মৌলভীবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিন্টুর ওপর। মামলার বাদি আবু সাঈদ চৌধুরী দাপুটে মিন্টুসহ একই মামলায় আরও ৩ জনকে আসামী করেছেন। অপর আসামীরা হলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার রহিমনগরের ফুলমিয়ার ছেলে ফাহাদ আলম, মৌলভীবাজার সদরের বর্ষিজোড়া গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে হোসাইন আহমদ ও মুটুকপুর গ্রামের মৃত ইয়াসিন মিয়ার ছেলে মোঃ মজনু মিয়া। মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমল আদালতে দায়েরকৃত মামলা নং পি-১৫৭/২০১৮ ইং।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই এমদাদুল হক মিন্টু গ্রীন হেলথ নামক একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেন মামলার বাদি সাঈদ চৌধুরীকে। পরবর্তীতে এ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে মিন্টু তার কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা জামানত নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং পর্যন্ত মেয়াদে একটি চুক্তিও সম্পাদন করেন। একই চুক্তির ভিত্তিতে সাঈদ পর্যায়ক্রমে আরও ১৭ লাখ টাকাসহ মোট ২২ লাখ টাকা এ প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন। পরে একসময় মিন্টুর প্ররোচনায় ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি গ্রীন লাইফ প্রাইভেট হাসপাতাল নামে রুপান্তরিত হয়। অথচ এতকিছুর নেপথ্যে ছিল মিন্টুর দুরভিসন্ধি।
এই দুরভিসন্ধি হাসিলের উদ্দেশ্যেই ১ ডিসেম্বর ২০১৭ ইং সন্ধ্যায় অভিযুক্ত এমদাদুল হক মিন্টু সাঈদ চৌধুরীকে ফোনে তার বাসায় ডেকে নেন। এসময় অন্য ৩ আসামীসহ মিন্টুর পক্ষের আরও ১০/১২ জন উপস্থিত ছিলেন। মিন্টুসহ তার সহযোগি ফাহাদ ও হোসাইন প্রমুখ তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্ব ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দেন। এতে সাঈদ চৌধুরী সম্মত না হওয়াতে মিন্টু তার মাথায় মারণাস্ত্র ঠেকিয়ে জোরপূর্বক ৩ টি অলিখিত স্ট্যাম্প ও ২ টি ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেন। পরে তিনি মৌলভীবাজার পৌর মেয়র বরাবরে ঘটনার সুরাহা চেয়ে লিখিত আবেদনও করেন। এতে কোনও কাজ না হওয়াতে তিনি মৌলভীবাজারের একাধিক গণ্যমান্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের স্মরণাপন্ন হন। অথচ সাঈদ চৌধুরীর সাথে বিষয়টি নিস্পত্তি করতে মিন্টুকে অনেকে অনুরোধ করা স্বত্বেও তিনি মীমাংসায় আসতে চাননি। উল্টো মিন্টু মামলার বাদী সাঈদকে হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে তার বিনিয়োগকৃত টাকা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আত্মসাতে নানা কুটকৌশলের আশ্রয় নেন। উপায়ান্তর না দেখে ভুক্তভোগি সাঈদ চৌধুরী মামলার আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগনামায় উল্লেখ করেন।
মামলার প্রধান আসামী এমদাদুল হক মিন্টুর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আত্মসাতের অপচেষ্টা প্রসংগেও তিনি কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হননি। উল্লেখ্য, তার বিরুদ্ধে একই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালের ১০ জুলাই স্বেচ্চাচারিতা মুলকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগে আরও একটি মামলা হয়েছিল। মামলা নং ৩৬৪/১৭। এছাড়া সৈয়ারপুর এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভুমি দখলসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে সরকারদলীয় এ নেতার বিরুদ্ধে।