বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের শিশুকন্যাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন। শুক্রবার (২১ আগস্ট) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইমের এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল তো বটেই, দেশের অন্যতম শীর্ষ তারকা সাকিব আল হাসান। তার প্রতি স্বাভাবিক কারণেই মানুষের আগ্রহ কিছুটা বেশি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ফলোয়ার সংখ্যাও এ কারণে প্রচুর। সাকিবকে নিয়ে যেকোনো পোস্ট মানেই ইতিবাচক মন্তব্যের পাশাপাশি নেতিবাচক কমেন্টকারীদের দৌরাত্ম, যার সবশেষ শিকার হয়েছেন তার বড় মেয়ে আলাইনা।
দেশের শীর্ষ তারকা হিসেবে সাকিবকে নিয়ে মানুষের চিন্তা যেনো একটু বেশিই দেখা যায়। কোনো ম্যাচে খারাপ করলে নেতিবাচক মন্তব্যের ছড়াছড়ি খুব স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতদিন অশিক্ষিত নেটিজেনদের দ্বিতীয় লক্ষ্যবস্তু ছিল তার স্ত্রী শিশির। সাকিব স্ত্রীর সঙ্গে যেকোনো ছবি পোস্ট করলেই দেখা যেতো বিশেষ এক ধরণের মানুষের উপস্থিতি যারা বিভিন্নভাবে শিশিরকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করতো।
সম্প্রতি একটি ফেসবুক পেজে সাকিবের বড় মেয়ে আলাইনার একটি ছবি পোস্ট করা হয়। কিছুদিন আগে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সূর্যমুখী বাগানে ঘুরতে গিয়েছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। সেখানে আলাইনার একটি একক ছবি পোস্ট করেছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। মূলত এই ছবিই পোস্ট করা হয় সেই ফেসবুক পেজে।
অনেকেই ভালো মন্তব্য করলেও মানুষরূপী কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের ব্যক্তিরা যথারীতি এই স্বাভাবিক ছবিতেও নেতিবাচক মন্তব্য করে। সূর্যমুখী বাগান হলেও তারা সেটিকে পাটক্ষেত হিসেবে আখ্যা দেয়। গ্রামাঞ্চলে পাটক্ষেতকে অনৈতিক কাজের একটি জায়গা হিসেবে ধরা হয়। আলাইনাকে নিয়ে সেসব কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত করে মন্তব্য করতে থাকে সেসব বিকৃত মস্তিষ্কধারীরা।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অনলাইন নববার্তা-কে জানাতে ই-মেইল করুন- nobobarta@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
শাহ এম আব্দুল্লাহ নামের একজন মন্তব্য করে, ‘সব কিছু ঠিক আছে, কিন্তু মামা এই বয়সে মাইয়া টা পাটক্ষেতে কি করে? ’ নিউটন তরফদার নামের আরেকজন মন্তব্য করে ‘এখন থেকে পাটক্ষেতে কেন?’
এমনই আরো অনেকে নেতিবাচক কমেন্ট করে। পরবর্তীতে অনেক নেটিজেনই বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সঙ্গত কারণে আর কোনো নেতিবাচক মন্তব্য উল্লেখ করা হলো না। আলাইনার মতো ফুটফুটে শিশুর ছবিতে এসব মন্তব্য দেখে অনেকেই এসব ব্যক্তিকে হিংস্র হায়েনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন এদের কারণেই শিশুরা ধর্ষণের শিকার হয়। অনেকেই এসব মন্তব্যকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করেছেন। তবে এসব মানুষরূপী হিংস্র হায়েনাদের মন মানুষিকতার আদৌ পরিবর্তন হবে কি?
সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন জানায়, বাংলাদেশের গর্ব সাকিব আল হাসানের কন্যার ছবি নিয়ে কিছু বিকৃত মানসিকতার লোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিষ্টাচার বজায় রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সূর্যমুখী ফুলের বাগানে কানে লাল ফুল গুঁজে পোস্ট করা ফুলের মতো সুন্দর একটি ছবির নিচে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন কয়েকজন বিকৃত মানসিকতার মানুষ। বিষয়টি সাধারণ মানুষকে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়। চারদিক থেকে আসতে থাকে প্রতিবাদ। ইতোমধ্যে কয়েকজনের পরিচয়ও শনাক্ত হয়েছে।