সোমবার, ৪ মাঘ, ১৪২৭, ১৮ জানুয়ারি, ২০২১, রাত ১২:২৩ মি:
জ্বালাই মশাল মানবমনে
কত কথাই তো ভাসে বাতাসে। কাজে আসার যোগ্যটুকু
গ্রহণ করে অবশিষ্ট কথা না শোনাই বিজ্ঞ লোকের ধর্ম
কানকে কখনো চালুনের মতো করো না। ময়দাকে ফেলে
চালুন ভুষি উচ্ছিষ্টকে ধরে রাখে। আনন্দময় জীবন যদি চাও
অল্পে তুষ্ট হও। বাদ দাও অপ্রয়োজনে মানুষের সংশ্রব।
আড়াল করে রাখতে শেখো নিজেকে। মানবসঙ্গ পরিহার,
রিপুর চাহিদা দমন, পার্থিব সম্পদের মোহমুক্তিই
হৃদয়-মন পবিত্র রাখার ব্যবস্থা করে। ফেরাও দৃষ্টিকে
সমস্ত নিষিদ্ধ দৃশ্য থেকে। বিবেক অনুমোদন করে না
এমন কথা মুখে করো না উচ্চারণ। মনের মধ্যে দিও না
বিদ্বেষের স্থান। অন্তরকে রাখো অশালীন চিন্তা থেকে মুক্ত
তোমার চাইতে সুখী কেউ হবে না। সুনামের মোহ
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অনলাইন নববার্তা-কে জানাতে ই-মেইল করুন- nobobarta@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
অহংকারের প্রথম ধাপ, মানুষকে যা ধ্বংসের মুখে ঠেলে।
সূচের অগ্রভাগ দিয়ে খুচিঁয়ে পাহাড় ধসিয়ে দেওয়ার চেয়ে
আত্মজ-অহংকার অপসারণ দুঃসাধ্য। অভিযোগ থেকে
জিহ্বাকে বিরত রাখো, পাবে শত্রুবিহীন জিন্দেগী। চলো ভাই
জ্বালাই মশাল মানবমনে। আজ এক হৃদয়ে জ্বাললে আলো
কাল তা ছড়াবে হৃদয় থেকে হৃদয়ে। খুঁজো না অপরের খুঁত,
নিজের চোখে গাঁথা আলপিনটিকে উৎপাটন করো আগে
তবেই অন্যের চোখের কাচপোকাটা বের করতে পারবে।
কবির বিধ্বস্ত কঙ্কাল
নিরন্ধ্র এক গুপ্ত গুহায় পেতেছিলে তাবু, কিন্তু হঠাৎ
নিভন্ত আজ তোমার প্রদীপশিখা
ওড়না আঁকা অন্ধকারে শ্বেত হাড়ের পাহাড়, তোমার কেবল
সাপের ভয়ে আঁতকে ওঠা মুখ
প্রলয়োত্থিত ঝড়ে হৃদয় উঠলো নড়ে, জলতেষ্টায়
শুকনো মরু তোমার কণ্ঠনালী।
কলম হাতে কবিÑসামনে লিখা কাগজ, দুঃখগুলো
ছাপাখানায় মলাটবন্দি বই
যা লিখেছো পুড়িয়ে ফেলে উড়িয়ে দাও ছাই, মুখে তোমার
বিকেল বেলার অস্তমিত রোদ
ঝরা শিশির জীবন তোমার যাবে একদা মরে, হঠাৎ হাওয়ায়
যেমন নিভে মাটির প্রদীপখানি।
হোঁচট খেয়ে চলন্তজন ভীষণ চমকে ওঠে, ওগো কবি
অহংকার তো মানায় না আর তোমায়
মধ্যরাতে পোষা কুকুর বিলাপ করে কাঁদে, শুনতে কি পাও
হয়তো কোথাও কেটে গেছে তাল
গামছা এনে পুঁটলি বাঁধো শেষ সম্বল তোমার, ছড়িয়ে থাকা
বুকের পাঁজর বিধ্বস্ত হাড়-গোড়।
কবরখানায় কঙ্কালটি মাটি চেপে রাখা, ভূতের সঙ্গে
শুরু হবে তোমার পাশা খেলা
পাহাড় চূড়ায় জোছনা বিলাস স্থগিত, পৃথিবীটা হবে না আর
পায়ে হেঁটে এফোঁড় ওফোঁড় করা
মাঝদুপুরে গঙ্গাফড়িং বীজতলাতে নাচে, তোমার কলম
সেই কথাটি লিখবে না আর খাতায়।
লেখক পরিচিতিঃ
আকিব শিকদার
৮৪২/২ ফিসারি লিংক রোড
হারুয়া, কিশোরগঞ্জ।
রচিত বই :
কাব্য গ্রন্থ : কবির বিধ্বস্ত কঙ্কাল (২০১৪), দেশদ্রোহীর অগ্নিদগ্ধ মুখ (২০১৫) কৃষ্ণপক্ষে যে দেয় উষ্ণ চুম্বন (২০১৬), জ্বালাই মশাল মানবমনে (২০১৮)। শিশুতোষ : দোলনা দোলার কাব্য (প্রকাশিতব্য)।
আকিব শিকদারের জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানাধীন তারাপাশা গ্রামে, ০২ ডিসেম্বর ১৯৮৯ সালে। প্রফেসর আলহাজ মোঃ ইয়াকুব আলী শিকদার ও মোছাঃ নূরুন্নাহার বেগম এর জ্যেষ্ঠ সন্তান। স্নাতক পড়েছেন শান্ত-মরিয়ম ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ে। পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর। খন্ডকালীন শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু; বর্তমানে প্রভাষক হিসেবে আছেন এ্যাপারেল ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজিতে।
কবির বিধ্বস্ত কঙ্কাল (২০১৪), দেশদ্রোহীর অগ্নিদগ্ধ মুখ (২০১৫), কৃষ্ণপক্ষে যে দেয় উষ্ণ চুম্বন (২০১৬), জ্বালাই মশাল মানবমনে (২০১৮) তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। “দোলনা দোলার কাব্য” তার প্রকাশিতব্য শিশুতোষ কবিতার বই। সাহিত্য চর্চায় উৎসাহ স্বরুপ পেয়েছেন “হো.সা.স. উদ্দীপনা সাহিত্য পদক”, “সমধারা সাহিত্য সম্মাননা”, “মেঠোপথ উদ্দীপনা পদক”। লেখালেখির পাশাপাশি সঙ্গীত ও চিত্রাংকন তার নেশা।