আজ শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন
ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়ালের সঙ্গে কথোপকথন গোপনের দায়ে সাকিব আল হাসানকে দুই বছর নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যদিও এরমধ্যে এক বছরের শাস্তি স্থগিতও করা হয়েছে। দীপক আগারওয়ালের সঙ্গে তিনবার কথোপকথন হলেও সেগুলো আইসিসির সংশ্লিষ্ট দফতরকে না জানানোয় সাকিবের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। সাকিবের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণার পরপরই ক্রিকেটভক্তদের মনে প্রশ্ন কে এই দীপক আগারওয়াল।
ভারতে ক্রিকেট জুয়াড়িদের নিয়ে টানাহেঁছড়া নতুন খবর নয়। ২০১৩ সালে ফিক্সিংয়ের দায়ে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার হয়েছিলেন বলিউড অভিনেতা বিন্দু সারা সিং ও তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের মেয়ে জামাতা গুরুনাথ মায়াপ্পান। বিন্দু ও গুরুনাথ তাদের স্বীকারোক্তিতে দীপক আগারওয়ালের নামটি উচ্চারণ করেছিলেন। ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়ালের আসল নাম বিক্রিম আগারওয়াল। সাকিবের এক পরিচিত ব্যক্তি দীপককে সাকিবের মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন। সেটা ২০১৭ সালের নভেম্বরের ঘটনা। এরপর দীপক আগারওয়াল সাকিবের সঙ্গে হোয়াটঅ্যাপসে ম্যাসেজ চালাচালি শুরু করেন। এক পর্যায়ে সাকিবকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দিলে সাকিব তা প্রত্যাখ্যান করেন। তবে বিধিমালা মোকাবেত তৎক্ষণাৎ বিষয়টি আইসিসিকে জানাতে ভুল করেন সাকিব।
এর পর ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ও একই বছরের ২৭ আগস্ট আইসিসির দুর্নীতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আকসু) দুই দফায় জুয়াড়িদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুবারই সাকিব দীপক আগারওয়াল নামে ভারতীয় এক জুয়াড়ির নাম প্রকাশ করেন। আকসুর তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগারওয়াল মোট তিনবার সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন। তবে প্রতিবারই সেইসব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ওয়ার্ল্ড নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। আর সেই বিষয়গুলো নিজের মধ্যেই গোপন রাখেন সাকিব। বিসিবি কিংবা আইসিসি কাউকেই সেই প্রস্তাবের বিষয়ে কিছু জানাননি।
ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে এর আগে বেশ কয়েকবারই গ্রেফতার হয়েছেন আগারওয়াল। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ফিক্সিংয়ের অভিযোগে একাধিককার কারাবরণও করেছেন। আইসিসির চিহ্নিত জুয়াড়িদের কালো তালিকায় উপরের দিকেই আছে এই ইন্ডিয়ান জুয়াড়ির নাম। আইসিসির কাছে এই জুয়াড়ি একজন মোস্ট ওয়ান্টেড। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিয়েল এস্টেট ব্যবসার মাধ্যমে ব্যবসায়ী জগতে পা রাখেন আগারওয়াল। এর পর বনে যান হোটেল ব্যবসায়ী। বর্তমানে চেন্নাই শহরে তার দুটি পাঁচতারকা হোটেল আছে। ১২৯ কক্ষবিশিষ্ট ব্যবসায়িক হোটেল ফরচুন সিলেক্ট পামস ও পাঁচতারতা হোটেল র্যাডিসন ব্লুর মালিক আগারওয়াল। এছাড়াও ভিভিএ হোটেল প্রাইভেট লিমিডেটের প্রধান ও আইটিসি হোটেল গ্রুপের সদস্যও তিনি।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে হোটেল ব্যবসায় পা রেখে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া আগারওয়াল একটা সময় ধীরে ধীরে জুয়াড়ি চক্রে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময় নাম বদলে ভিক্টর পরিচয়েও খেলোয়াড়, কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তিনি।
You must be logged in to post a comment.